শেরপুর প্রতিনিধি:
বদলে গেছে শেরপুরের মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র। এখানে এক সময় দালাল দৌরাত্বে সেবা নিতে আসা সাধারণ মানুষ হরনারীর শিকারসহ টাকা ছাড়া কোন চিকিৎসা সেবা পেতেন না। অত্যাধুনিক অপারেশ থিয়েটার থাকলেও সিজারিয়ান ডাক্তার ও নানা সরঞ্জামাদি না থাকায় সিজার করা যেতো না। কিন্তু এখন থেকে বিনা মূল্যে সকল ধরনের সেবা পাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। বিশেষ করে গর্ভবতি মা, নবজাতন শিশু এবং স্বাবাবিক ও সিজারিয়ান মায়েদের বিনা মূল্যে এম্বুলেন্স, পরীক্ষা-নিরিক্ষা ও ওষুদসহ বিভিন্ন সেবা পাচ্ছে। এতে উপকৃত হচ্ছে দরিদ্র ও সাধারণ মানুষ।
১৭ ডিসেম্বর থেকে ২২ ডিসেম্বর পর্যন্ত “সময়মতো নিলে পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি, শিশু ও মাতৃস্বাস্থের হবে উন্নতি” শ্লোগানকে সামনে রেখে পরিবার কল্যাণ সেবা ও প্রচার সপ্তাহ উদ্বোধন উপলক্ষ্যে এসব তথ্য দেন শেরপুর সদর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শারমিন রহমান অমি।
এসময় প্রধান অতিথি ছিলেন সদর আসনের সাংসদ ও জাতীয় সংসদের হুইপ আতিউর রহমান আতিক। সেবা সপ্তাহ উদ্বোধন শেষে প্রধান অতিথি কল্যাণ কেন্দ্রের সামনে বৃক্ষ রোপন, দু’জন প্রতিবন্ধীকে হুইল চেয়ার এবং সেবা কেন্দ্রে আসা সেবা গ্রহিতা মা ও শিশুদের মাঝে শীত বস্ত্র বিতরণ করেন।
এসময় তিনি বলেন, সরকার সাধারণ মানুষের জন্য বিনা মূল্যে সকল চিকিৎসা সেবা পাওয়ার কথা থাকলেও দালালদের দৌরাত্বে তা পাননা অনেক সময়। কিন্তু বর্তমানে শেরপুরের এ মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রটি সম্পুর্ণ রূপে দালাল মুক্ত হয়েছে এবং এখানে সরকারী নানা সুযোগ সুবিধার কথা এতাদিন মানুষ জানতেন না। তার এখন থেকে সাধারণ মানুষ এখানে আসবে এবং তাদের সেবা নিতে আসবে এ পত্যাশা করি।
এসময় সেবাকেন্দ্রে আসা কযেকজন গর্ভবতি ও প্রসূতি মা জানায়, আগে আমরা এখানে আসতাম না কারণ অনেক টাকা লাগতো, এছাড়া সেবার মানও তেমন ছিলো না, সিজার করা যেতো না। বর্তমানে এখানে বিনা মূল্যে সেবা দেয়া হয় জেনে আসছি। আমাদের ধারনা ঠিক হয়েছে। আমরা এখানে এসে বিনা মূল্যে এম্বুলেন্স, পরীক্ষা-নিরিক্ষা, ওষুদ ও সিজার করতে পেয়েছি।
মা ও শিশু সেবা কেন্দ্র সূত্র জানায়, এখানে উন্নত অপারেশন থিয়েটারসহ বর্তমানে রোগীদের জন্য পোষ্ট অপারেটিভ কক্ষসহ ১০ বেডের ওয়ার্ড রয়েছে, রয়েছে সিজার করার জন্য নারী ডাক্তার, বিনা মূল্যের অত্যাধুনিক আল্টাসোনাগ্রাম। এছাড়া বিনা মূল্যের ওষুদ, কিশোরীদের বয়:সন্ধিকালীন সময়ের সেবা। নরমাল ডেলিভারী রোগীকে বিনা মূল্যে সদর উপজেলার মধ্যে এম্বুলেন্স দিয়ে বাড়ি পৌছে দেয়া হয়।
এ বিষয়ে সদর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শারমিন রহমান অমি জানায়, এখানে শুধু মা ও শিশুদেরই নয় আমরা কিশোরীদের নানা সমস্যাসহ নারীদের জরায়ু ক্যান্সার সনাক্ত করা হয়। আমি আসার পর থেকে গত ৩ বছর ধরে এখানে অভাবনিয় পরিবর্তন এসেছে। আগে এক সময় এখানে মানুষ আসতে ভয় পেতো। কিন্তু এখন সে অবস্থা নেই। এখানে এখন সম্পূর্ণ দালাল মুক্ত করা হযেছে। সরকারী এ সেবা বিনা মূল্যে পাওয়া যায় এটা আস্তে আস্তে গ্রাম পর্যায়ে ছড়িয়ে পড়ছে এবং মানুষ-জনও আসছে এ ফ্রি সেবা নিতে।