Connect with us

Highlights

কুমিল্লার ঘটনার জেরে ১৩ জেলায় হামলা-ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ, নিহত ৪

Published

on

বিডিপি ডেস্ক:
কুমিল্লার ঘটনার জেরে বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত ১৩ জেলায় হামলা, প্রতিমা ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এসব ঘটনায় গ্রেপ্তার করা হয়েছেন শতাধিক অভিযুক্ত। গত বুধবার সকালে কুমিল্লায় ‘কোরআন অবমাননার’ খবর স্যোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়লে বিভিন্ন জেলায় উত্তেজনা ছড়ায় ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরে সেখানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বিজিবি মোতায়েন করা হয়। এ ঘটনার জেরে ওইদিন রাতে চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে ৪ জন মারা যায়।

চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে সংঘর্ষের ঘটনার পর সেখানে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। ওই সংঘর্ষে নিহত ৪ জনের মরদেহ বৃহস্পতিবার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। ঘটনা তদন্তে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে জেলা প্রশাসন। কুমিল্লায়ও একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে জেলা প্রশাসন। সংঘর্ষের ঘটনায় নিহত৪ জন হল- হাজীগঞ্জ উপজেলার বড়কুল ইউনিয়নের রায়চোঁ গ্রামের আল আমিন (১৮), রান্ধুনীমুড়া এলাকার ফজলুল হকের ছেলে ইয়াছিন হোসেন (১৫), একই এলাকার আব্বাস উদ্দিনের ছেলে শামীম (১৯) ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার বাবলু (৩০)।

এই পরিস্থিতির মধ্যেই শুক্রবার শারদীয় দুর্গোৎসবের বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জন দেবেন হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা। পূজামণ্ডপগুলোর নিরাপত্তা বাড়ানোর পাশাপাশি ২২ জেলায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদস্যদের মোতায়েন কররেছে সরকার। এছাড়া কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, চাঁদপুর, কক্সবাজার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও রাজশাহীতে দ্রুতগতির মোবাইল ইন্টারনেট সেবা বন্ধ রয়েছে বলে জানা যাচ্ছে।

কুমিল্লার ঘটনায় এই জেলায় বৃহস্পতিবার শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ৪ টি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় ৪২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কুমিল্লার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলনকক্ষে এদিন বিকেলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়।

বিভিন্ন জেলায় হামলা-সংঘর্ষ-প্রতিমা ভাঙচুর:

গত বুধবার থেকে বৃহস্পতিবার গভীর রাতে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত কুমিল্লা ও চাঁদপুর বাদে অন্তত ১২ জেলায় মন্দিরে হামলা, সংঘর্ষ ও ভাঙচুরের খবর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া খুলনায় একটি মন্দিরের প্রবেশপথ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ১৮টি বোমাসদৃশ বস্তু।

মাদারীপুর: মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার ভূরঘাটা এলাকায় বৃহস্পতিবার বিকেলে পুলিশের সঙ্গে মুসল্লিদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে আহত হন দুই পুলিশসহ পাঁচজন। কালকিনি থানার ওসি ইসতিয়াক আশফাক বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ কয়েকটি ফাঁকা গুলি ছোড়ে। সংঘর্ষের সময় বেশ কয়েকটি দোকানপাটে হামলা ও ভাঙচুর চালানো হয়।

গাজীপুর: মহানগরের কাশিমপুর বাজার এলাকায় বৃহস্পতিবার সকালে দুর্বৃত্তরা তিনটি মন্দিরে হামলা চালিয়ে প্রতিমা ভাঙচুর করেছে। ঘটনার প্রতিবাদে গাজীপুর জেলার হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন করেছেন। পুলিশ অভিযান চালিয়ে আশপাশের এলাকা থেকে ১৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। গাজীপুর জেলা প্রশাসক এস এম তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে জানতে পেরেছি, ৪০০ থেকে ৫০০ লোক ওই মন্দিরে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেছে।’

সিলেট: সিলেটের জকিগঞ্জের কালীগঞ্জ বাজারে বুধবার রাতে খণ্ড খণ্ড মিছিল বের করা হয়। খবর পেয়ে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুমী আক্তার, জকিগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি) জাকির হোসেন, উপজেলা চেয়ারম্যান লোকমান উদ্দিন চৌধুরী ও জকিগঞ্জ থানার ওসি আবুল কাসেম ঘটনাস্থলে যান। পরে তাঁরা কালীগঞ্জ বাজারের অদূরে মানিকপুর ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ের ভেতরে অবস্থান নেন। একপর্যায়ে ইউপি কার্যালয়ের সামনে থাকা ইউএনও, এএসপি, উপজেলা চেয়ারম্যান এবং ওসির গাড়িতে হামলা হয়। এএসপির গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ফাঁকা গুলি ছোড়ে। পরে সিলেটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গণমাধ্যম) লুৎফর রহমান বলেন, পুলিশ অজ্ঞাতনামা ৪০০ থেকে ৫০০ জনকে আসামি করে মামলা করেছে। ঘটনাস্থল থেকে আটক তিনজনকে এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

বাগেরহাট: বুধবার রাত ১০টার দিকে বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার রায়েন্দা ইউনিয়নের মালিয়া গ্রামে মিছিল বের করেন কিছু লোক। এ সময় মিছিল থেকে উত্তেজনা ছড়ানোর দায়ে চারজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

কুড়িগ্রাম: কুড়িগ্রামের উলিপুরে বুধবার সন্ধ্যায় দুই দফায় শহরের প্রধান সড়কে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। রাত ১০টার দিকে এই উপজেলার ৩টি ইউনিয়নের ৮টি মন্দিরে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। উলিপুর থানার থানার ওসি ইমতিয়াজ কবির বলেন, এ ঘটনায় পুলিশ মামলা করেছে। ১৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

চট্টগ্রাম: চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার পশ্চিম চাম্বল বাংলাবাজার জলদাসপাড়ায় ও কর্ণফুলী উপজেলার জুলধা ও বড়উঠান ইউনিয়নের মাঝামাঝি শাহমীরপুর সনাতনপাড়ায় বুধবার সন্ধ্যায় হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। এ সময় কয়েকটি মন্দির ও বাড়িঘরে হামলা হয়। কর্ণফুলী থানার ওসি দুলাল মাহমুদ বলেন, কর্ণফুলীর ঘটনায় অজ্ঞাতনামা ১৫০ জনকে আসামি করে মামলা হয়েছে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ: চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার মনাকষা এলাকায় দুটি পূজামণ্ডপে হামলার অভিযোগে মামলা হয়েছে। শিবগঞ্জ থানার ওসি ফরিদ হোসেন বলেন, মামলায় অজ্ঞাতপরিচয় ১৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এ ঘটনায় ১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

মৌলভীবাজার: মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জেও বুধবার রাতে দুটি পূজামণ্ডপে হামলা ও প্রতিম ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় কমলগঞ্জ থানায় দুটি মামলা হয়েছে বলে জানান কমলগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সোহেল রানা।

কক্সবাজার: কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলায় বুধবার সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত ৪টি এলাকায় অন্তত ৭টি মন্দির ও বেশ কিছু বসতবাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটেছে। ঘটনা সামাল দিতে গিয়ে পুলিশ কর্মকর্তা ও একজন জনপ্রতিনিধি আহত হয়েছেন। এসব ঘটনায় পেকুয়া থানায় তিনটি মামলা হয়েছে বলে জানান পেকুয়া থানার ওসি শেখ মোহাম্মদ আলী।

খুলনা: নগরের রূপসা মহাশ্মশানঘাট মন্দিরের প্রবেশপথের পাশ থেকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ১৮টি বোমাসদৃশ বস্তু উদ্ধার করা হয়েছে। খুলনায় র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‍্যাব–৬) উপপরিদর্শক আবদুল খালেক বলেন, মন্দিরের মূল ফটকসংলগ্ন এলাকা থেকে বোমা নিষ্ক্রিয়করণ ইউনিট গিয়ে প্যাকেটে মোড়ানো অবস্থায় ১৬টি এবং মাটিতে পড়ে থাকা অবস্থায় দুটি বোমা উদ্ধার করে। এগুলো রাতেই নিষ্ক্রিয় করার ব্যবস্থা করা হয়। র‍্যাব-৬ -এর পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোসতাক আহমেদ বলেন, কোনো কুচক্রী মহল সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করতেই ঘটনাটি ঘটিয়ে থাকতে পারে।

বান্দরবান: মানবন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশেকে কেন্দ্র করে ত্রিমুখী সংঘর্ষে লামা থানার অফিসার ইনচার্জসহ উভয়পক্ষের শতাধিক লোক আহত হয়েছে। এ সময় উত্তেজিত জনতা লামা কেন্দ্রীয় হরিমন্দিরের সামনে রাস্তায় নির্মিত দূর্গাপূজার প্যাণ্ডেল, দোকান ও আসবাবপত্র ভাঙচুর করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ অন্তত ২০ রাউন্ড টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। ঘটনাস্থলে পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনী, বিজিবি ও আনসার মোতায়েন করা হয়েছে।

লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জের ইছাপুর ইউনিয়নে ৫টি মন্দিরে হামলা হয়েছে। এসময় ১৬ প্রতিমা ভাঙচুর করেছে দুর্বৃত্তরা। বুধবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে প্রশাসনের পাশাপাশি স্থানীয় সংসদ সদস্য ডা. আনোয়ার খান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। রামগঞ্জ থানা অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন জানান, এ ঘটনায় মামলা হয়েছে, তদন্ত করে অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা হবে।

এদিকে একই সময় রামগতি পৌরসভার জমিদারহাট বাজার সংলগ্ন শ্রী শ্রী রামঠাকুরাঙ্গন মন্দির ও পূজামণ্ডপে দুর্বৃত্তরা হামলা চালায়। এ সময় পুলিশ লাঠিচার্জ, শটগানের ৫৪ রাউন্ড গুলি ও তিন রাউন্ড টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। এ ঘটনায় পুলিশের চার সদস্যসহ অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছে। পুলিশ বাদি হয়ে অজ্ঞাতনামা ২৫০ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেছে বলে জানিয়েছেন রামগতি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সোলাইমান।

আরও পড়ুন:

চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে যা ঘটেছিল

কি ঘটেছিলো কুমিল্লার পূজামণ্ডপে?

 

Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Highlights

সুবর্ণচরে বন্যার্তদের মাঝে সহায়ক ফাউন্ডেশন কুষ্টিয়ার ত্রাণ বিতরণের প্রস্তুতি

Published

on

নোয়াখালী প্রতিনিধিঃ চলমান দেশে আকস্মিক বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে ত্রাণ সামগ্রীর প্রস্তুতি নিচ্ছেন সহায়ক ফাউন্ডেশন কুষ্টিয়া। ২৫ আগস্ট রবিবার সুবর্ণচরের স্খানীয় সাংবাদিক ইমাম উদ্দিন সুমনসহ ৪ সদস্যের একটি টিম গঠন করা হয়।

দুদিন ব্যাপী এ ত্রাণ সামগ্রীর মূল পৃষ্টপোষক হিসেবে রয়েছেন সহায়ক ফাউন্ডেশন কুষ্টিয়া’র প্রতিষ্ঠাতা আমেরিকা প্রবাসী শান্ত এবং সুবর্ণচর উপজেলার চর জব্বর থানার সাবেক অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জিয়াউল হক তরিক খন্দকার।

সহায়ক ফাউন্ডেশন, কুষ্টিয়া দীর্ঘ বছর ধরেই প্রাকৃতিক দূর্যোগ, বেকারত্ব দূরীকরণ, ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসা, মেধাবী ছাত্রদের শিক্ষার ব্যায়ভার গ্রহণ, অসহায়, হতদরিদ্র মানুষের খাদ্য, বাসস্থান, চিকিৎসা সহ নানামুখি সামাজিক কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছেন।

তারই ধারাবাহিগতায় ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষীপুর, কুমিল্লাসহ দেশের প্রতিটি জেলায় বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করে যাচ্ছেন। সুবর্ণচরের বর্তমান বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে সাংবাদিক মোঃ ইমাম উদ্দিন সুমন সংবাদ প্রকাশের পর সহায়ক ফাউন্ডেশনের দৃষ্টিগোচর হয়।

সংবাদে সূত্রধরে পুলিশ কর্মকর্তা জিয়াউল হক তরিক খন্দকারের সার্বিক তত্বাবধানে চলমান বন্যায় গৃহবন্ধী এবং কর্মহীন হয়ে পড়া সুবর্ণচরের বেশ কয়েকটি পরিবারকে খাদ্য সামগ্রী প্রদান করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়।
সহায়ক ফাউন্ডেশন কুষ্টিয়ার এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানান সুবর্ণচর উপজেলার জনসাধারণ।

সহায়ক ফাউন্ডেশন কুষ্টিয়া’র প্রতিষ্ঠাতা আমেরিকা প্রবাসী শান্ত বলেন, মানু্ষ মানুষের জন্য, এমন দূর্যোগপূর্ণ মুহুর্তে অসহায় মানুষের পাশে থাকাটা প্রতিটি বিত্তশালী মানুষের নৈতিক দ্বায়িত্ব, তিনি দেশের প্রতিটি সামাজিক সংগঠন, অর্থশালী মানু্ষদেরকে দূর্যোগ মোকাবেলা করার অনুরোধ জানান। তবে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের সহযোগিতায় সব সময় সহায়ক ফাউন্ডেশন পাশে থাকার আশ্বাস দেন জিয়াউল হক তরিক খন্দকার। তিনি বলেন, যে কোন জেলায় দূর্যোগ মোকাবেলায় সহায়ক ফাউন্ডেশন কুষ্টিয়া তাদের সাধ্যমত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

Continue Reading

Highlights

হামলা ও লুটপাট, হেযবুত তওহীদের সদস্যদের জানমালের নিরাপত্তার দাবি

Published

on

By

নোয়াখালীতে অরাজনৈতিক আন্দোলন হেযবুত তওহীদ সদস্যদের বাড়িঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে লুটপাট, গাইবান্ধা, শেরপুর, জয়পুরহাট, পঞ্চগড়, পাবনা, সুনামগঞ্জসহ ৮টি কার্যালয়ে হামলার প্রতিবাদ জানিয়েছে সংগঠনটি। আজ শনিবার (১০ আগস্ট ২০২৪) আন্দোলনটির মুখপাত্র মো. মশিউর রহমান স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ প্রতিবাদ জানানো হয়।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে গতকাল শুক্রবার রাতে নোয়াখালীর সোনাইমুড়ি উপজেলার পোড়করা গ্রামে হেযবুত তওহীদের সদস্যদের ৩০ একর জমি থেকে সংগ্রহকৃত আটটি খড়ের গাদা আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেওয়া হয় বলে উল্লেখ করা হয়। এর আগে গত ৫ আগস্ট আইনশৃঙ্খলার অবনতির সুযোগে একটি উগ্রবাদী গোষ্ঠী হেযবুত তওহীদ সদস্যদের বাড়ি-ঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে প্রায় ২ কোটি টাকার সম্পদ লুটপাটের ঘটনা উল্লেখ করে সোনাইমুড়ীতে হেযবুত তওহীদের বিভিন্ন প্রকল্পে হামলার পাঁয়তারা হচ্ছে জানিয়ে এর বিরুদ্ধে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হয়।

বিবৃতিতে মশিউর রহমান বলেন, আন্দোলন প্রতিষ্ঠার শুরু থেকেই হেযবুত তওহীদের বিরুদ্ধে ধর্মের অপব্যবহারকারী উগ্রবাদী গোষ্ঠীগুলো নানা মিথ্যা অপপ্রচার চালিয়েছে। ফলে আমাদের কর্মীদেরকে অবর্ণনীয় নির্যাতন নিপীড়ন ও হয়রানির শিকার হতে হয়েছে। উগ্রবাদী গোষ্ঠী আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতার পিতৃনিবাস করটিয়া জমিদার বাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। মাদারীপুর, কুষ্টিয়া, নোয়াখালী, পাবনায় হমালা চালিয়ে নৃশংসভাবে সদস্যদের হত্যা করেছে। এখন পর্যন্ত আমাদের উপর সহস্রাধিক হামলার ঘটনা ঘটেছে। আইন হাতে তুলে না নিয়ে আমরা আইনের দ্বারস্থ হয়েছি। কিন্তু হামলাকারীরা ধর্মের মুখোশ পরে পার পেয়ে গেছে।

তিনি আরও বলেন, ২০১৬ সালে হেযবুত তওহীদের বর্তমান এমাম হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম নোয়াখালীর সোনাইমুড়িতে অবস্থিত তাঁর নিজ বাড়ির আঙিনায় একটি মসজিদ নির্মাণের উদ্যোগ নেন। স্থানীয় উগ্রগোষ্ঠী ‘মসজিদ নয়- গির্জা বানাচ্ছে’ গুজব তুলে দিয়ে তারা ধর্মান্ধ মানুষকে উস্কে দিয়ে সেদিন তাঁর বাড়িঘরসহ অন্যান্য সদস্যদের বাড়িঘরও জ্বালিয়ে পুড়িয়ে দেয়। মসজিটি ভেঙে গুড়িয়ে দেয়। এরপর মসজিদের নির্মাণকাজে স্বেচ্ছাশ্রম দিতে আগত দুই তরুণ সদস্যকে প্রকাশ্য দিবালোক জবাই করে হত্যা করে। তাদের হাত পায়ের রগ কাটে, চোখ তুলে ফেলে এবং দেহ আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়।

তিনি বলেন, ২০১৬ সালের হামলার পর হাল ছেড়ে না দিয়ে হেযবুত তওহীদের এমাম তাঁর গ্রামের আর্থসামাজিক উন্নয়নের জন্য অন্তত ৫০টির মতো উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করেছেন। তার মধ্যে রয়েছে কয়েকটি গরুর খামার, মাছের ঘের, একটি বিদ্যালয়, চার তলা মসজিদ কমপ্লেক্স, গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি, খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল ইত্যাদি। সেই প্রতিষ্ঠানগুলোতে শ্রমিক কর্মচারী মিলিয়ে প্রায় এক হাজারের মতো সদস্য তাদের পরিবার পরিজন নিয়ে ওই গ্রামেই বসবাস করছেন। বর্তমানের অস্থিতিশীল পরিবেশকে কাজে লাগিয়ে আবারো উগ্রবাদীরা ২০১৬ সালের মত একটি তাণ্ডব চালিয়ে গণহত্যার ষড়যন্ত্র করছে। হেযবুত তওহীদের এমামের গ্রাম চাষীরহাট থেকে এক বর্গ কিলোমিটারের মধ্যে বিশেষ করে লাকসাম উপজেলার অন্তর্গত বিপুলাসার বাজারের নিকটে আমাদের গার্মেন্টস কারখানা, খামার ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলোতে কর্মরত লোকজন বাসা ভাড়া করে থাকেন। অনেকে সেখানে মুদির দোকান করেন, রিকশা গ্যারেজ ইত্যাদিতে কাজ করেন। ৫ আগস্ট সরকারের পতনের দিন দুর্বৃত্তরা তাদের প্রত্যেকটি বাড়িতে লুটপাট চালিয়েছে, গ্যারেজ লুট করেছে, দোকান লুট করেছে, বাড়িতে আগুন দিয়েছে। পঞ্চাশটি পরিবারের প্রায় ২ কোটি টাকার সম্পদ তারা লুট করে পরিবারগুলোকে সর্বস্বান্ত করেছে।

এদিন হেযবুত তওহীদের শেরপুর, জয়পুরহাট, পাবনা, সুনামগঞ্জসহ মোট ৮টি কার্যালয়ে হামলা চালানো হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের রাজনীতির সাথে কোন সম্পৃক্ততা অতীতেও ছিল না, এখনও নেই। আমাদের আইন ভঙ্গ করার কোন রেকর্ড নেই। আমরা উগ্রবাদের বিরুদ্ধে কাজ করি তাই এই উগ্রবাদী গোষ্ঠীটি মাননীয় এমামের বাড়িসহ হেযবুত তওহীদের সদস্যদের বাড়িতে হামলা চালাতে ও উন্নয়ন প্রকল্পগুলো লুণ্ঠন করার জন্য উসকানি দিয়ে যাচ্ছে। অনলাইনে তারা শত শত পোস্ট করেছে এ জাতীয় হুমকি দিয়ে। আমরা সেখানে ভয় ও আতঙ্কের মধ্যে দিনানিপাত করছি।

তিনি বলেন, ৫ আগস্ট সোনাইমুড়ি থানায় হামলা করা হয়েছে এবং সেখানে চারজন পুলিশসহ সাত জন মানুষ নিহত হয়েছে। সেদিন বাজারে বাজারে হামলা ও লুটপাট হয়েছে। সেদিন এবং তার পরেরদিন এই উগ্রবাদী গোষ্ঠীটি বারবার চাষীরহাট বাজারে এসে হেযবুত তওহীদকে এলাকা থেকে উচ্ছেদ করার হুমকি দিয়ে গেছে। তবে এলাকাবাসীর প্রতিরোধের মুখে খুব একটা সুবিধা করতে পারেনি। কিন্তু অনলাইনে ও অফলাইনে ষড়যন্ত্র এখনও অব্যাহত রয়েছে। আমরা বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলছি, সোনাইমুড়ীতে হেযবুত তওহীদের এমামের বাসগৃহকে কেন্দ্র করে একটা ধ্বংসযজ্ঞ চালানোর পাঁয়তারা করা হচ্ছে। সোনাইমুড়ীসহ সারাদেশে হেযবুত তওহীদের সদস্যদের জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তায় দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করুন।

এমতাবস্থায় সরকারের নিকট হেযবুত তওহীদের পক্ষ থেকে ৪টি দাবি জানান মশিউর রহমান। দাবিগুলো হলো- ১. আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দ্রুত হুমকিদাতাদের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হোক। ২. স্থানীয় বাজারে সেনাবাহিনী মোতায়ন করা হোক। ৩. বিপুলাসারে ৫ তারিখে সংঘটিত লুটপাটে আমাদের অর্ধশত পরিবারের সদস্যরা নিঃস্ব হয়ে গেছেন। বিনা কারণে যারা তাদের এই ক্ষতিসাধন করল তাদেরকে দ্রুত আইনের আওতায় আনা হোক। ৪. এখনও প্রতিমুহূর্তে গুজব সৃষ্টি করে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টির যে ষড়যন্ত্র হচ্ছে সে বিষয়ে সরাসরি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

উল্লেখ্য অরাজনৈতিক আন্দোলন হেযবুত তওহীদ সম্পূর্ণ নিঃস্বার্থভাবে মানবতার কল্যাণে নিজেদের কষ্টার্জিত অর্থ ব্যয় করে যাবতীয় উগ্রবাদ, সন্ত্রাসবাদ, সাম্প্রদায়িকতা, ধর্মান্ধতা, নারী নির্যাতন ইত্যাদির বিরুদ্ধে ইসলামের প্রকৃত আদর্শ প্রচারের কাজ করছে। উপমহাদেশের প্রখ্যাত পন্নী পরিবারের সন্তান এমামমুযযামান জনাব মোহাম্মদ বায়াজীদ খান পন্নী ১৯৯৫ সালে হেযবুত তওহীদ প্রতিষ্ঠা করেন। ধর্মীয় সংস্কারপন্থী আন্দোলন হেযবুত তওহীদ একাগ্রভাবে ইসলামের সুমহান আদর্শকে জনগণের মধ্যে প্রচারের কাজ করে আসছে। আদর্শ প্রচারের লক্ষ্যে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অন্তত দুই লক্ষাধিক জনসভা, সেমিনার, র‌্যালি, মানববন্ধন করে আন্দোলনটি।

Continue Reading

Highlights

সাংবাদিক কল্যাণ সমিতির সভাপতি খোরশেদ-সম্পাদক মাহাবুর

Published

on

“আঁধারের সাথে দ্বন্দ্ব যাদের, আমরা তাদের সাথে” এই শ্লোগানকে ধারণ করে নোয়াখালীতে যাত্রা শুরু করেছে সাংবাদিক কল্যাণ সমিতি (সাকস)। বৃহস্পতিবার(২০ জুন) সকালে চড়ুইভাতি পার্টি সেন্টারের হলরুমে সংগঠনটির সতীর্থ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এসময় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যদের নাম ঘোষণা করা হয়।

২৫ সদস্য বিশিষ্ট কমিটির সর্বসম্মতিক্রমে সভাপতি হিসেবে দৈনিক বাংলা পত্রিকার প্রতিনিধি খোরশেদ আলম এবং সাধারণ সম্পাদক হিসেবে এশিয়ান টিভির জেলা প্রতিনিধি মাহাবুব আলমকে এক বছর মেয়াদে দায়িত্ব প্রদান করা হয়।

কোরআন তেলওয়াতের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। পরবর্তীতে সদস্যগণ বক্তব্য রাখেন। সতীর্থ সম্মেলনে সাংবাদিকদের কল্যানে সংগঠনটি কিভাবে ভূমিকা রাখবে সেবিষয়ে আলোকপাত করা হয়।

এসময় সমিতির সহ-সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার বারি পিন্টু বক্তব্যে বলেন, সাংবাদিক ও তাদের পরিবারের সদস্যদের অসুস্থতায় চিকিৎসা সহায়তা নিয়ে পাশে থাকবে সাংবাদিক কল্যাণ সমিতি।

সংগঠনের সহ-সভাপতি শাহ জাহান আলম তার বক্তব্যে বলেন, যে কোন সংগঠনের গণমাধ্যমকর্মীদের জন্য সাংবাদিক কল্যান সমিতির দরজা খোলা। প্রকৃত সাংবাদিকদের যে কোন সমস্যায় কার্যকরী ভূমিকা রাখবে এই সংগঠন।

সমিতির সহ-সভাপতি জাভেদ আলম কিরন সকলকে ঐক্যবদ্ধ ভাবে এই সংগঠকে সামনে এগিয়ে নেওয়ার আহব্বান জানান। এসময় সকল সদস্য সাংবাদিকদের কল্যানে ঐক্যবদ্ধ থাকার অঙ্গীকার করেন।

সাধারণ সম্পাদক মাহাবুর আলম বলেন, সাংবাদিকেরা পেশাগত দায়িত্ব পালনে দিনে-রাতে যেকোন সময় সমস্যায় পড়লে তাদের পাশে থাকবে সাংবাদিকদের কল্যান সমিতি।

সভাপতি খোরশেদ আলম বক্তব্যে বলেন, সাংবাদিক কল্যান সমিতির সদস্যদের বাইরেও কোন গণমাধ্যমকর্মী যদি কোন সমস্যায় পড়েন হামলা-মামলার শিকার হয় তাদের পাশেও থাকবে সাংবাদিক কল্যান সমিতি।

সতীর্থ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, দৈনিক বাংলা ও যায়যায়দিন পত্রিকার প্রতিনিধি খোরশেদ আলম, দৈনিক জনতার জমিন পত্রিকার সম্পাদক জাবেদ আলম কিরন, দৈনিক ভোরের ডাক পত্রিকার প্রতিনিধি শাহজাহান আলম, এশিয়ান টিভির জেলা প্রতিনিধি মাহাবুর আলম, বিজয় টিভির জেলা প্রতিনিধি শেখ ফরিদ, দৈনিক সময়ের আলোর বিনোদন বিট প্রতিনিধি আনোয়ার বারি পিন্টু, দৈনিক সকালের সময় পত্রিকার প্রতিনিধি গোলজার হানিফ, দৈনিক গণমুক্তি পত্রিকার সাজ্জাদুল ইসলাম।

এছাড়া আরো উপস্থিত ছিলেন দৈনিক চলমান নোয়াখালীর প্রতিনিধি জাহাঙ্গীর আলম, প্রতিদিন আমার সংবাদ পত্রিকার প্রতিনিধি অনুপ সিংহ, দৈনিক ভোরের সময়ের প্রতিনিধি সেলিম হোসেন, সংবাদ সারাবেলা পত্রিকার প্রতিনিধি শাহাদাত হোসেন রাসেল, দৈনিক দেশবার্তা পত্রিকার প্রতিনিধি রবিউল হাসান, দৈনিক ভোরের চেতনার প্রতিনিধি রফিকুল ইসলাম সোহাগ, দৈনিক মুক্ত খবরের প্রতিনিধি শাহ পরাণ, দৈনিক বর্তমানের জেলা ব্যুরো ইয়াছিন শরীফ অনিক, দৈনিক আমাদের অর্থনীতির প্রতিনিধি মামুনুর রশিদ, দৈনিক বিজনেস বাংলাদেশের প্রতিনিধি মাহবুবুল হাসান, দৈনিক আলোকিত সকালের প্রতিনিধি মৃনাল কান্তি, দৈনিক বর্তমান কথার প্রতিনিধি মাইনুল ইসলাম আরিফ, দৈনিক দেশের কন্ঠের প্রতিনিধি মোঃ ইয়াসিন, দৈনিক গণতদন্তের প্রতিনিধি নুর মোহাম্মদ সবুজ, দৈনিক স্বাধীন ভোরের প্রতিনিধি সাজিদ মাহমুদ প্রমুখ।

Continue Reading